বাঙালী জীবনে রমণী / নীরদচন্দ্র চৌধুরী

 বাঙালী জীবনে রমণী
নীরদচন্দ্র চৌধুরী
মূল্য : ৪০০/=
২৫% কমিশন বাদে মূল্য : ৩০০/=

নীরদচন্দ্র চৌধুরী ছিলেন খ্যাতনামা বাঙালি মননশীল লেখক ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদ। তবে তিনি নীরদ সি চৌধুরী নামেই ছিলেন অধিক পরিচিত। 'স্কলার এক্সট্রাঅর্ডিনারি' নামে ম্যাক্স মুলারের জীবনী লিখে ১৯৭৫ সালে নীরদ সি চৌধুরী ভারত সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মাননা হিসেবে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি তার ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তির্যক প্রকাশভঙ্গির জন্য বিশেষভাবে আলোচিত ছিলেন। উপেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ও সুশীলা সুন্দররানী চৌধুরানীর আট সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় নীরদ চৌধুরী তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলা, বর্তমান বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। অসামান্য প্রতিভাধর এই লেখকের কর্মজীবনের সূত্রপাত হয়েছিল ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর হিসাবরক্ষণ অধিদপ্তরে একজন কেরানি হিসেবে। চাকরির পাশাপাশি একই সময়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ রচনা করতে থাকেন। জনপ্রিয় সাময়িকীগুলোতে নিবন্ধ পাঠানোর মাধ্যমে লেখার জগতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। তার প্রথম নিবন্ধটি ছিল অষ্টাদশ শতকের বিখ্যাত বাঙালি কবি ভারত চন্দ্র্রের ওপর। এই নিবন্ধটি ওই সময়ে কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত ইংরেজি সাময়িকী 'মডার্ন রিভিউ'তে স্থান পায়। অল্প কিছুদিন পরই চাকরি ত্যাগ করে তিনি সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে নতুন কর্মজীবন শুরু করেন। ওই সময়ে কলকাতা কলেজ স্কয়ারের কাছাকাছি মির্জাপুর স্ট্রিটে তিনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের সঙ্গে বসবাস করতেন। নীরদ চৌধুরী তখনকার অত্যন্ত জনপ্রিয় ইংরেজি ও বাংলা সাময়িকী মডার্ন রিভিউ, প্রবাসী এবং শনিবারের চিঠিতে সম্পাদনাকর্মে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯২৭ সালে বাংলা ভাষার স্বনামধন্য সাময়িকী 'শনিবারের চিঠি'র সম্পাদক পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ বছরই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘটে। নীরদ চৌধুরী ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে লেখিকা অমীয়া ধরের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে জন্ম নেয় তিন পুত্রসন্তান- কৃতি, পৃথিবী ও ধ্রুব। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে নীরদচন্দ্র চৌধুরী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সংশ্নিষ্ট রাজনীতিবিদ শরৎ চন্দ্র বসুর একান্ত সচিব হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন। ফলে তিনি খ্যাতিমান মহাপুরুষ যেমন- মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুসহ অনেক রাজনৈতিক নেতার সংস্পর্শ পান। ১৯৫১ সালে প্রকাশিত হয় নীরদচন্দ্র চৌধুরীর প্রধান সাহিত্যকর্ম 'দি অটোবায়োগ্রাফি অব অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান'। এর ফলে তিনি সেরা ভারতীয় ইংরেজি লেখকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। নতুন ও স্বাধীন দেশ হিসেবে ভারতের বিচার ব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে বইটি উৎসর্গ করেন তিনি। নীরদ চৌধুরী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন সৃষ্টিশীল এবং স্বাধীনচেতা লেখক হিসেবেই পরিগণিত ছিলেন। ৯৯ বছর বয়সে তার শেষ বইটি প্রকাশিত হয়। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তার স্ত্রী অমীয়া চৌধুরী অক্সফোর্ডে মারা যান। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডেই নিজের ১০২তম জন্মদিনের দু'মাস আগে পরলোকগমন করেন সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ নীরদ সি চৌধুরী।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শ্রেষ্ঠগল্প সমরেশ বসু

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী / ড. মজহারুল ইসলাম